মন মানুষের সন্ধানে

ওস্তাদ বাউল এম.হোসেনের গীত রচনায়

সোনা বন্ধুরে প্রেম আগুনে জলে হৃদয়,

বলি কাহা-রে ।।

আমি কি ভুলিতে পারি তোমার মুখ ও ছবি

তোমার কথা ভেবে ভেবে হয়ে যাব কবি-রে ।।

আগে যদি জানতাম বন্ধু প্রেমে এত জ্বালা,

না করিতাম ভালোবাসা থাকিতাম একেলা-রে ।।

অন্তর আমার হইল কালা তোমার ও লাগিয়া

জীবন আমার চলে যাবে বিচ্ছেদের গান গাইয়া-রে ।।

হোসেনে কয় প্রাণ বন্ধু দেখা দাও আসিয়া,

কোন বা দেশে রইলে তুমি আমারে কাঁন্দাইয়া-রে ।।

সঙ্গেঁ নিয়া বেহালা হইলাম সাধের বাউলা

মন প্রাণ উতালা ভাবের বাউলা গানে

বুঝেনা গানের মর্ম ভাবের ভাবুক বিনে ।।

এই গান কেউ-রে হাসায় কেউ-রে কাদাঁয়

কষ্ট ভুলায় শান্তি নাই যার মনে,

গান শুনে কেউ দোলায় মাথা, কারও বুকে ভাবের ব্যাথা

গানে কেউ জিকির করে স্রষ্টা সাধনে ।।

আছেন যারা ভাব জগতে, মজিয়া গানের পিরিতে

বন্ধুয়ার সাথে প্রেমের টানে,

গানে আল্লাহ নবীর জয় গান পীর আউলিয়ার শান

ভাবুক করে মধু পান নিরবে গোপনে ।।

(নাই) হোসেনের সাধন ভজন (শুধু) গানে বন্ধুর গুণকির্থন

পাইতে আশা রাঁঙ্গা চরণ ঘোর নিদানে ।

দেহেতে থাকতে প্রাণ,গেয়ে যাবো বাউলা গান

করিবো মাসুকের সন্ধান একাগ্র মনে ।।

বন্ধুর বাঁশীর সুরে আমায় পাগল করিল

বাঁশির সুরে পরান ঘরে থাকিতে নাহী দিলো ।।

বন্ধুর বাঁশীর সুরে কি যাদু

শুইলে না আসে নিদ্রা শুনতে চায় শুধু

বাঁশীর সুর তার এত মধু

ভাব করে যে শুনিল ।।

বারে বারে করি যে মানা

নাম ধরিয়া প্রান বন্ধু আমায় ডেকো না,

সহিতে যে আর পারি না

মনে আগুন লাগিল ।।

হোসেন তোমার বাঁশীর সুর শুনে

কি করিব কোথায় যাবো ভাবি একমনে

বাঁশীর সুরে বিভোর হই স্বপনে

সুখেরই ঘুম ভাঙ্গিল ।।

বৃন্দাবনে রাঁধা বিনে সঙ্গের সাথী নাই আমার,

শ্যামের বাঁশি-রে রাধা বলে ডাকো একটি বার ।।

ডাকো বাঁশি রাঁধা রাঁধা,

আমি যে তার প্রেমে বাঁধা,

পান করিবো প্রেমসুধা,

রাঁধা আমার গলার হার ।।

মান করিল রাই শ্রীমতী,

করেছি,কত মিনতি

রাঁধার সাথে কী পিরীতি

জানে শুধু মন আমার ।।

রাঁধার প্রেমে সপিয়া মন,

ঘুরছি আজও এই বৃন্দাবন,

হোসেনে কয় রাঁধা কি ধন,

জানে হারিয়ে যায় যার ।।

তুমি কত সুখে আছো-রে বন্ধু আমায় করে পর,

অহ-রহ দহন জ্বালায়,কাঁদে মোর অন্তর ।।

অনন্তআদি আজ অবধি খুঁজি নিরন্তর,

পাই না সাড়া, দাওনা ধরা রইয়াছো গোচর ।।

ধন্য জীবন পাইলে চরণ করিতাম আদর,

অন্ধের নয়ন বোবার বচন নিলক্ষিয়ার চর ।।

দিয়া লুকি প্রাণের পাখি আছো কোন শহর,

(তোমার) প্রেমের ফান্দে হোসেন কান্দে দয়া নাই কি তোর ।।

নিষ্টুর প্রেমে মজাইলাম মন, ওলো সখীগন,

নিষ্টুর প্রেমে মজাইলাম মন,

প্রেম শিখাইয়া শ্যাম কালিয়া আছে কোথায় লুকি দিয়া,

কবে এসে দিবে দরশন ।।

না জেনে পিরিতের রীতি,ঘটিল আমার দুগর্তি

অসতি হেইলাম যার কারন,

নিষ্টুর বন্ধুর পাষান হিয়া,দেখল না একবার আসিয়া

জলে ভাসে এ দুটি নয়ন ।।

যতনে গাতিলাম মালা,পরাব প্রাণ বন্ধুর গলা

প্রেমের জ্বালা করব নিবারন,

আইলনা মোর কাল শশী,ফুলের মালা হইল ভাসী

সর্বনাশী হইলাম এই ভুবন ।।

সইব কত প্রেম যাতনা,হইলাম পাগল দেওয়ানা

খবর লয়না বন্ধুয়া সুজন,

হোসেনেরী কপাল দোষে,বন্ধুয়া রইল বিদেশে,

অবশেষে হইবে কি মিলন ।।