Wednesday 26 August 2015

বাউল সাধক আরকুম শাহ

আরকুম শাহ:-

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ধরাধরপুর গ্রামে ১৮৭৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর বাবা মোহাম্মদ আছিম । ১৯৪১ সালে তাঁর একমাত্র গানের সংকলন হকিকতে সিতারা প্রকাশিত হয়েছে । তিনি ১৯৪১ সালে মৃত্য বরণ করেন ।

মুর্শিদ ধরিও কান্ডার,
অবুঝ বালকের নৌকা ডুবিব তোমার,
মুর্শিদ ধরিও কান্ডার ।।

আমার নৌকায় তোমার বেসাত ধরছি পাড়ি আমি,
নৌকা ডুবি বেসাত গেলে কলঙ্কিনি তুমি ।।

আমার নৌকা ভব সায়রে তুমি নিজ ঘর
দিল ‍দুর্বিনের আয়না ধরি রাখিও নজর ।।

ধন্য বাপের বেটা যেই শত গুন তার,
বাপের ধনের বেটা মহাজন রংপুরের বাজার ।।

স্বামীর মাঝে নারীর বেসাত নারীর মাঝে স্বামী
তোমার মাঝে আমি মুর্শিদ আমার মাঝে তুমি ।।

চন্দ্র চড়ির মধুর ভান্ডার ভরিয়া থইছ ঘরে
বেপারী দেখিয়া বাট নাম রউক সংসারে ।।

হযরত শাহা আব্দুল লতিফ নিজের বেসাত দিয়া
পাগল আরকুমের নৌকা দিয়াছেন ভাসাইয়া ।।


২)
চাইর চিজে পিঞ্জিরা বানাই,
মোরে কইলায় বন্ধু রে বন্ধু নিরধনিয়ার ধন
কেমনে পাইমু রে কালা তোর দরশন ।।

সমদ্রে জল উঠে বাতাসের জোরে
আবর হইয়া ঘুরে পবনের ভরে
জমিনে পড়িয়া শেষে সমুদ্রেতে যায়
জাতেতে মিশিয়া জাত তরঙ্গ খেলায় ।
তুমি আমি আমি তুমি জানিয়াছি মনে
বিচিতে জন্মিয়া গাছ বিচি ধরে কেনে
এক হইতে দুই হইল প্রেমেরই কারণ
সে অবধি আশিকের দিল করে উচাটন ।।

পরিন্দা জানোয়ার যদি কোন এক কলে
জাতি ছাড়া বন্ধ হয় শিকারিয়ার জালে
কিরুপে জিন্দেগি কাটে বন্ধ খানায় তার
মাশুক হইয়া কর আশিকের বিচার ।
আশক মাশুক যদি থাকে দুই স্থানে
টেলী দিয়া খুসীর মঙ্গল যদি জানে
বিনা দরশনে কিলা বাঁচিব জীবন
শুন প্রভু প্রাণ প্রিয়া মোর নিবেদন ।।

পাগল আরকুমে কয় মাশুক বানিয়া
দুহাং পাতাইয়া থইছে উলুরে গাথিয়া
আহার করিতে যদি না যাইত মন
না লাগিত প্রেম লাঠা না হইত মরণ ।।



3)

আমার বুকে যে আগুন গো ললিতা সখী
তোমরা তার ভেদ কেউ জানো না ।
আমার কেউ দোষ দিও না ।।

আমি দাসী কুল বিনাশীর এই সে ভাবনা
ওরে পিরীত করি ছাড়িয়া গেল হায় গো ললিতা সখী
ফিরিয়া সে আর আইলো না ।।

ভাসাইয়া প্রেম সায়রে ফিরিয়া চাইলো না ।
ওরে ডুবিয়া যদি মরি আমি গো হায়গো ললিতা সখি
রইবো দুঃখ চরণ পাইলাম না ।।

জিতে মরা জ্ঞান হারা হইলাম না দেওয়ানা
ওরে জগতে কলঙ্কী হইলাম গো হায়গো ললিতা সখি
তবু বন্ধের দয়া হইল না ।।

পাগল আরকুম বলে প্রাণ না দিলে মাসুক মিলে না
ওরে পার যারা ধর তারা গো হায় গো ললিতা সখী

মুই দাসীর আশা পুরলো না ।।

3)

কৃষ্ণ আইলা রাধার কুঞ্জে ফুলে পাইলা ভ্রমরা,
ময়ুর বেশেতে সাজইন রাধিকা ।।
সুয়া চন্দন ফুলের মালা,সখিগনে লইয়া আইলা,
কৃষ্ণ রাধার গলে দিলা বাসর হইল উজালা ।।
কৃষ্ণয় দিলা রাধার গলে রাধায় দিলা কৃষ্ণর গলে,
উদল ও বদল করি আনন্দে করইন খেলা ।।
সুয়া চন্দন ছিটাইলা , সুগন্ধেতে মোহিত উজালা
আনন্দে সখিগন নাচে দেখিয়া প্রেমের খেলা ।।
কৃষ্ণ প্রেমের প্রেমিক যারা,নাচে গায় খেলে তারা
কুলমানের ভয় রাখে না ললিতা আর বিসখা ।।
পাগল আরকুম কইন পুরুষ নারী,হস্তে হস্তে ধরাধরি

বৃন্দাবনে আজ এস্কের ঝড়ি খেলিতেছে প্রেমের পাশা ।।

No comments:

Post a Comment